a men doing oju
আজ আমরা জানবো-আজু ভেঙ্গে যাওয়ার কারণ,যে সকল কারণে ওযু ভাঙ্গে না, এছাড়া যে অবস্থায় বা যে সমস্ত কারণে ওযু হয় না।
♣️অজু ভেঙ্গে যাওয়ার কারণসমূহঃ
1.প্রস্রাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়া।
2.শরীরের কোন স্থান থেকে রক্ত,পুঁজ বা পানি বেরিয়ে গড়িয়ে পড়া।
3.চিৎ বা কাত হয়ে অথবা কিছুতে হেলান দিয়ে ঘুমানো।
4.মুখভরে বমি করা।
5.দাত দিয়ে রক্ত বের হলে তা থুথুর সমান বা বেশী হওয়া।
6.বেহুশ,অচেতন বা পাগল হয়ে যাওয়া। 7.নামাজে শব্দ করে হাসা।
♣️যে সমস্ত কারণে ওযু নষ্ট হয় নাঃ
1.অজু করার পর সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ালে অজু নষ্ট হয় না
2.লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে বা দেখলে ওযু নষ্ট হয় না তবে লজ্জাস্থান স্পর্শ করার পর হাত ধুয়ে ফেলা উত্তম
3.অজু করার পর হাত-পা বা শরীরের অন্য কোন জায়গার চামড়া বা হাত পায়ের নগ বা চুল কাটলে বা উঠিয়ে ফেললে অজু নষ্ট হয় না।(যদি রক্ত বের না হয়)
4.বিড়ি,সিগারেট ইত্যাদি খেলে ওযু নষ্ট হয় না।তবে এগুলো না খাওয়া উত্তম।
5.কোনো কারণে সতরের পুরোটা বা আংশিক খুলে গেলে অযু নষ্ট হয়না।
♣️অজু সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলাঃ
1.কোনো ক্ষতস্থান থেকে যদি রক্ত পুঁজ বের হয়ে গরিয়ে না পড়ে,তাহলে ওযু নষ্ট হয় না।কিন্তু গড়িয়ে পড়লে অজু নষ্ট হয়ে যাবে।তবে যদি অল্প অল্প করে বের হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে কেউ তা মুছে ফেলে,তাহলে দেখতে হবে,যদি মুছে ফেলা না হতো তাহলে গড়িয়ে পড়তো কিনা।সেক্ষেত্রে রক্ত,পুজ ইত্যাদি গড়িয়ে পড়ার পরিমাণ বের হলে অজু ভেঙ্গে যাবে।অন্যথায় অজু ভাঙবে না।তবে একাদিক ক্ষতস্থান থেকে যদি রক্ত-পুঁজ বের হয়।তাহলে প্রত্যেক ক্ষতস্থানের রক্ত-পুঁজকে ভিন্ন ভিন্নভাবে হিসাব করতে হবে।সবগুলো একসঙ্গে মিলিয়ে হিসাব করা যাবে না।আবার কোন ইনজেকশন পুশ করলেও সামান্য রক্ত বের হতে পারে তবে এর পরিমাণ খুবই কম হলে তাতে ওযু ভাঙবেনা।আর যদি এতটুকু রক্ত বের হয়, যা মুচে না ফেললে গড়িয়ে পড়তো,তাহলে অজু ভেঙ্গে যাবে।
2.মুখ ভরে বমি করা বলতে,ভূমির পরিমাণ এত বেশী হওয়া যা মুখে আটকে রাখা কষ্টকর।এভাবে মুখ ভরে বমি করলে অজু ভেঙ্গে যাবে।ভুমি যদি মুখ ভরে না হয় তাহলে অজু ভাঙ্গে না।যদি থেমে থেমে অল্প অল্প করে বমি হয় তাহলে দেখতে হবে যতটুকু ভুমি হয়েছে তা যদি একসঙ্গে হতো তাহলে তা মুখ ভরে হতো কিনা।যদি মুখ ভরে হওয়ার পরিমাণ হয় তাহলে অজু ভেঙ্গে যাবে। অন্যথায় ভাঙবেনা।
3.দাঁতের মাড়ি থেকে যদি রক্ত বের হয় তাহলে দেখতে হবে তা কমপক্ষে থুথুর সমান হয় কিনা।থুথুর সমান বা বেশি হলে অজু ভেঙ্গে যাবে।এর চেয়ে কম হলে ওযু ভাঙবেনা।
4.নামাজে উচ্চস্বরে হাসলে ওযু ভেঙ্গে যায়।তবে মুচকি হাসিতে অজু ভাঙবেনা।
5.নখে যদি নেইলপলিশ বা এমন কিছুর প্রলেপ দেওয়া থাকে যার ফলে এই জায়গায় পানি পৌঁছায় না,সেক্ষেত্রে অজু হবেনা।তবে মেহেদি দেয়া থাকলে কোন সমস্যা নেই।
6.কারো দাড়ি যদি এত ঘন হয়,যার ভেতর দিয়ে চেহারার চামড়া দেখা যায় না,তাহলে সেসব দাড়ির নিচের চামড়া ধোয়া জরুরী নয়।কিন্তু চেহারার সীমার মধ্যে যতটুকু দাঁড়ি আছে সেগুলো ধোয়া জরুরি।তবে যদি দাড়ি পাতলা হয়,তাহলে চেহারার চামড়ায় পানি পৌঁছাতে হবে।
7.যদি পানির সঙ্গে কোনো কিছু মেশানোর কারণে পানির নাম পাল্টে যায় যেমন:সরবত বা গোলাপজল ইত্যাদি তাহলে সেই পানি দিয়ে অজু হবেনা।একবার ব্যবহৃত পানি দিয়ে আবার ওযু করা যাবে না।অনেকে ওযু করার সময় নিচে একটি পাত্র রাখে যাতে হাতমুখ ধোয়া পানি সেখানে জমা হয়,এরপর সেই পানি দিয়ে পা ধুয়ে অজু শেষ করেন।এমন করলে অজু হবে না।এ পানি যদিও পবিত্র কিন্তু আজুতে একবার ব্যবহৃত হওয়ার কারণে দ্বিতীয় বার তা দিয়ে ওযু করা যাবে না।
8.যে কাজগুলো তিনবার করা সুন্নত সেগুলো ইচ্ছাপূর্বক তিনবারের বেশি করা মাকরূহ।
♣️মাজুর ব্যাক্তির অজুঃ
যদি কোন ব্যক্তির কোন সমস্যার কারণে অজু ভেঙ্গে যাওয়ার কনো একটি কারণ বার বার ঘটতে থাকে।যার কারণে ওযু করে নামায পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না,এর মধ্যেই আবার অজু ভেঙ্গে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিকে "মাজুর" বলা হয়।যেমন:অনবরত প্রস্রাবের ফোটা পড়া বা নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণে নামাজের সম্পূর্ণ ওয়াক্তের মধ্যে যদি এতটুকু সময় না পাওয়া যায়,যাতে ফরজ অঙ্গগুলো ধুয়ে শুধু ফরজ নামাজ আদায় করা যায়।তাহলে সে ব্যক্তি মাজুর বলে গণ্য হবে।আর যদি শেষ সময়ে হলেও এভাবে নামাজ আদায় করার মত সময় পাওয়া যায়,তাহলে সে ব্যক্তি মাজুর হবেনা।
মাজুর ব্যক্তি প্রত্যেক নামাযের ওয়াক্তের জন্য নতুনভাবে অজু করবে।যে কারণে কেউ মাজুর হলো,এক নামাজের ওয়াক্তে একবার অজু করার পর সে কারণ যতই ঘটুক এক্ষেত্রে ওযু নষ্ট হয় না। তবে অন্য কোন কারণ ঘটলে ওযু ভেঙ্গে যাবে।

লেখার মধ্যে ভুল থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন

আমার পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টটিতে লাইক,কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন।

Post a Comment

أحدث أقدم